তোমার সাথে ঘুমাবোনা | Love Story
4:14:47 PM
ওই বিছানা থেকে নামো।
-কেনো!
-তোমার সাথে ঘুমাবোনা।
-আমি আবার কি করলাম!
-কি করোনি সেটা ভাবো।
<কিছুক্ষণ ভেবে>
-ধুর কিছু তো মাথায় আসছেনা।
-গোসলের কথা ভুলে গেছো?
-এই শীতে আবার কেউ গোসল
করে,জানতামনাতো।
-তোমায় কেউ বলছে গোসল করতে!তুমি আমার
সাথে ঘুমাবানা ব্যস।
-ওকে কাল গোসল করবো,আজকের মতো ঘুমাই!
-না।
-প্লিজ সোনা।[হাত ধরে কাছে টেনে নিয়ে]
-ছাড়ো তো।তুমি রুম থেকে বেড় হও।[দূরে সরে
গিয়ে]
-বেড় হয়ে কোথায় যাবো!
-কোথাও যেতে হবেনা,এখন গোসল করে আসো
যাও।
-এই শীতে রাত দশটায় পাগলও ভুল করে গোসল
করেনা।
-তুমি করবা।
-আজকের মতো ছাড় দাও।
-প্রতিদিন ছাড় দিতে দিতে তুমি একদম পেয়ে
বসেছো।আজ আর ছাড়াছাড়ি নাই।
-আর একদিন সোনা।
-প্রতিদিনই বলো।
-আজ গড প্রমিজ।
-ধুর,থাকো তুমি।আমিই অন্য রুমে যাচ্ছি।
-ওই না....শুনো...আরর.....
নিধি,কথায় বিন্দুমাত্র পাত্তা না দিয়ে
বালিশ কম্বল নিয়ে অন্য রুমে চলেগেলো।
আলসামো করে আমিও উঠে ডাকলাম না।
লাইট অন করেই এদিকওদিক ঘুরতে ঘুরতে কিছুক্ষণ
বাদে ঘুমের দেশে পাড়ি দিলাম।
*
ভোড়ের আলো চোখে এসে পড়ায় ঘুম ভেঙে
গেলো।
পাশে তাকিয়ে খেয়াল করলাম মায়াবী এক
কন্যা খুব যত্নসহকারে জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে
আছে।
মিষ্টি সূর্যের আলো মায়াবী কন্যার মুখে পড়ে
তাঁর মায়া জেনো দ্বিগুণ করে দিচ্ছে।
খুব ইচ্ছে হলো মায়া মাখা মুখটায় স্পর্শ নিতে।
তাই কাছে গিয়ে মায়াবিনীর কপালে
আলতো ছোঁয়া এঁকে দিলাম।
আলতো ছোঁয়ার স্পর্শ পেয়ে বালিকা
বাচ্চাদের মতন নড়েচড়ে আরো শক্ত করে
জড়িয়ে ধরলো।
আমি সাহস করে জড়িয়ে ধরতেই ঘুম জড়িয় কণ্ঠে
নিধি বললো "আমায় একদম টাচ করবানা।"
-তুমি আমায় টাচ করছো যে?
-আমি টাচ করতে পারবো,তুমি পারবানা।
-বিয়েতে কবুল তুমি একা বলোনি,আমিও
বলছিলাম।
-তো...
-আমারও জড়িয়ে ধড়ার অধিকার আছে।
-অধিকার তুমি কাল রাতেই হারিয়েছো।
-কিভাবে!
-আমি রেগে যখন অন্য রুমে চলে গেলাম তুমি তখন
আনতে গেলা না কেনো।জানোনা তোমায়
ছাড়া রাতে ঘুমাতে পারিনা।
-আচ্ছা ,সরি।
-নাহ্,সরিতে কাজ হবে।তোমায় প্রমিজ করতে
হবে।
-কি প্রমিজ।
-প্রতিদিন গোসল করবা।
-ওকে প্রমিজ,এখন জড়িয়ে ধরি?
-হিহিহি।
বালিকার আদেশ পেয়ে জড়িয়ে ধরে আরো দুই
ঘণ্টার সুপার একটা ঘুম দিয়ে উঠলাম।
.
বিপদে পরলাম দুপুরে.....
-রফিইইইইইইইইই
-কি হইছে সোনা।[রুম থেকে গোসলখানায়
দৌড়ে গিয়ে]
-এইটা তোমার পকেটে কি![সিগারেট
দেখিয়ে]
-হায় হায়,আমার পকেটে আসলো কিভাবে।
-তুমি সিগারেট খাওয়া ছাড়োনি?
-এটা তো আমার পকেটে থাকার প্রশ্নই উঠেনা।
-আগে আমার প্রশ্নের উত্তর দাও,তুমি সিগারেট
খাওয়া ছাড়ছো..হ্যা কি না।
-মাঝে মাঝে খাই সোনা প্রমিজ।
-তোমায় একবার মানা করছি,মনে নাই![অগ্নি
দৃষ্টিতে তাকিয়ে]
-সরি।[মাথা নিচু করে]
-ধুরর তোমার সাথে সংসার কড়ার মানেই
হয়না।
-সরি..সরি..সরি।
-হাহ্ হা।থাকো তুমি তোমার সরি আর
সিগারেট নিয়ে।আমি আজকেই বাপের বাড়ি
যাবো।
-চলো..অনেকদিন শ্বশুরবাড়ি যাইনা।
-তোমার সাথে কে যাবে!
-কেনো তুমি।
-হুহ্।
বলেই বালিকা সিগারেট হাতে ধরিয়ে
দিয়ে রুমে চলে গেলো।
সিগারেট ফেলে আমিও বালিকার পিছু পিছু
গেলাম।
*
নিধি ১ঘণ্টায় ব্যাগ গুছিয়ে বাপের বাড়ি
যাওয়ার জন্য রেডি।
-ওই ভাড়া দাও।
-কিসের ভাড়া।
-বাস ভাড়া।
-আমায় না নিলে আমি ভাড়া দিবোনা।
-চুপচাপ ভাড়া দাও।
-না দিলে!
-তুমি দিবা ব্যস,আমি আর তোমার সাথে এক
মুহূর্ত সংসার করতে চাইনা।
-বাপের বাড়ি গিয়ে রাতে ঘুম আসবেতো।
-ব্লাকমেইল করছো।
-নাহ্।
-ভালো,২০০০টাকা বেড় করো।
-ভাড়া তো ৫০০টাকাও না।
-দিতে বলছি দিবা।
-আচ্ছা,কিন্তু আমি আসি সাথে![টাকা বেড়
করে]
-নাআআআআ।
বলেই ম্যাডাম হাত থেকে সব টাকা কেড়ে
নিয়ে রাগি লুক দিয়ে চোখ মুছতে মুছতে
বেড়িয়ে গেলো।
.
ম্যাডামকে কিছু বুঝতে না দিয়ে আমিও
ম্যাডামের পিছু নিলাম।
পিছু নিতে নিতে গিয়ে পৌছালাম
ম্যাডামের বাড়ির সামনে।তবে ভেতরে
ঢুকবার সাহস হয়নি।
এদিকে খুধার জ্বালায় পেট জ্বলে যাচ্ছে তাই
একটা রেস্টুরেন্টে গিয়ে পেটপুড়ে
বিরিয়ানি খেয়ে নিলাম।
তারপর অচেনা শহরে আনমনা হয়ে হাঁটতে
লাগলাম।
ধীরেধীরে দিন ঘনিয়ে রাত নেমে এলো।
তার সাথে পড়লো তীব্র শীত।
তাই কাঁপাকাঁপি অবস্থায় ম্যাডামের বাড়ির
সামনে বসে ঘনো কুয়াশায় মোড়ানো অন্ধকার
আকাশের চাঁদ দেখতে লাগলাম।
এরি মাঝে কখন ঘড়ির কাটা এগারোটার
কাছে গিয়ে থেমেছে অজানা।
হঠাৎ সেলফোন বেজে উঠলো।রিসিভ করতেই
অভিমানী জড়িত কণ্ঠে ভেসে এলো "কি
করো।"
-বসে আছি।
-খাওয়াদাওয়া করছো?
-হুম।
<দুপাশেই কিছুক্ষণ নিশ্চুপ>
-ওই কিছু বলছোনা যে!
-তুমি খাওয়াদাওয়া করছো?
-হুম।
-এখন ঘুম আসছেনা তাইতো!
-নাআআ।
-আমি আসবো!
-কোথায়!
-যেখানে আসলে তোমার ঘুম পাবে।
-কিকরে?
-উড়ে উড়ে।
-হিহিহি।
-হাসি থামিয়ে বাড়ির নিচে আসো।
-কেনো!
-আসবাতো আগে।
-ওকে।
ম্যাডাম কল কেটে দিয়ে কিছুক্ষণবাদে
বেড়িয়ে এলো।
এদিকওদিক তাকানোর পর আমার দিকে চোখ
পড়তেই রাগি ভাব নিয়ে আমার কাছে আসলো।
তারপর কিছুক্ষণ অবাক হয়ে তাকিয়ে থেকে....
-এইটা কি পড়ে আছো!
-শার্ট।
-তুমি একটা পাগল।ভেতরে চলো তাড়াতাড়ি।
.
অতঃপর হাত টানতে টানতে ভেতরে নিয়ে
গিয়ে গেলো।
কম্বল নেওয়া সত্তেও আমার কাঁপাকাঁপি দেখে
নিধি তখন সব উষ্ণতা উজাড় করে জড়িয়ে
ধরলো।